জয়নাল আবেদীন । খুব সম্ভবত তিনিই একমাত্র উর্দুভাষী যিনি বাংলা ভাষা রক্ষার জন্য আন্দোলন করেছিলেন বায়ন্নতে। ভাষা আন্দোলনে শরিক হয়ে জেল খেটেছেন । ভাষা আন্দোলনের পক্ষে এবং তৎকালিন উর্দুভাষী পাকিস্তান সরকারের বিপক্ষে উর্দু ভাষায় চিকা লিখেছেন...রাজপথে নেমে অন্যভাষা সৈনিকদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে আন্দোলনে শরিক হয়েছেন। এখনো প্রায় নিরবে-নিভৃতেই থাকেন । সেই মানুষটি অসূস্থ হয়েছেন ..এখবর পেয়ে চ্যানেল আইয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফরিদুর রেজা সাগর তাকে নিয়ে একটি রিপোর্ট করাতে বলেছেন এসাইনমেন্ট এডিটর আরেফিন ফয়সলকে । তিনি আমাকে দায়িত্ব দিলেন হামপাতালে গিয়ে রিপোর্ট করার। ২৫ অক্টোবর বিকেলে ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালের নয়তলায় মুখোমুখি হলাম ভাষা আন্দোলনের সৈনিক জয়নাল আবেদীনের । তবে সঙ্গে ক্যামেরাম্যান আর মাইক্রোফোন দেখে অবাক হলেন । প্রথমেই হাতজোড় করে বললেন....এসব আমার দরকার নেই...আমি এসব চাইনা । আমি টিভিতে ইন্টারভিউ দেই না । এতো প্রচার-প্রচারণা আমার দরকার নেই । যেমন আছি তেমনই ভালো । টিভি ক্যামেরায় ইন্টারভিউ নেয়া হলেনা । অনেক চেষ্টা আর অনুরোধের পরও হলোনা টিভি পর্দায় তাকে তুলে ধরা হলোনা। তবে সত্তররোর্ধ হাসিখুশী এই মানুষটি মুখ বন্ধ করলেন না । আলাপ চালিয়ে গেলাম । তার সম্পর্কে আরো জানার আগ্রহ । এসাইনমেন্টে যাওয়ার সময় আমাদের সঙ্গে বাসায় ফিরছিলেন নিউজ এডিটর প্রণব সাহা । জয়নাল আবেদীনের কাছে যাচ্ছি শুনে তিনিও সঙ্গি হলেন । তিনি জানিয়েছিরেন, ঢাকার সিনিয়র সাংবাদিকদের কাছে জয়নাল আবেদীন পরিচিত জানু ভাই হিসেবে। কারো কারো কাছে পরিচিত বিহারী জয়নাল হিসেবে । তিনি মর্নিং নিউজ,ইষ্টার্ণ নিউজ এজেন্সি,টাইমসএ সাংবাদিকতা করেছেন। বর্তমানে নিউ নেশনের সঙ্গে জড়িত । পৈত্রিক বাড়ি ছিল ভারতের এলাহাবাদে । ৪৭ সালে বাবার সঙ্গে চলে আসেন পূর্ব পাকিস্তানে। কমিউনিষ্ট পার্টির রাজনীতি করতেন । বিয়ে করেননি। নিজস্ব বাড়িঘরও নেই । বায়কুল মোকাররমের দক্ষিণের একটি হোটেলে থাকেন বাড়ির মতো।